সর্বশেষ

এদেশের তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজন মানসম্মত কারিগরি শিক্ষা: শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশ :


/ সভায় বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী /

২৪খবরবিডি: 'এদেশের কর্মক্ষম তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে মানসম্মত যুগোপযোগী কারিগরি শিক্ষা ও দক্ষতা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।'
-তিনি বলেন, এদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেকগুলো বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘোষণাসহ অনেকগুলো পরিকল্পনা নিয়েছেন। সেখানে বিনিয়োগ হবে এবং অনেক দক্ষ জনবলের প্রয়োজন হবে। দেশে দক্ষতা প্রশিক্ষণ আগে থেকেই চলে আসছে। তবে অনেক সময় তা শিল্পের উপযোগী না হওয়ায়, আমরা সেসব প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে পারছি না। এজন্য আমাদের কর্মক্ষম তরুণ যুবাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজন মানসম্মত যুগোপযোগী কারিগরি শিক্ষা ও দক্ষতা প্রশিক্ষণ।

'বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে রোববার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) এই সভার আয়োজন করে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- 'ট্রান্সফর্মিং ইউথ স্কিলস ফর দ্য ফিউচার'।

-সভায় দীপু মনি বলেন, বাংলাদেশের সামনে যেমন চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তেমনি অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। অনেক প্রতিকূলতা অতিক্রম করে প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় মনোবল এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে আমাদের পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে, যা আজ আমাদের সক্ষমতার প্রতীক। আমাদের অগ্রগতির অন্যতম স্বীকৃতি হলো, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আমরা শামিল হতে পেরেছি।

-তিনি বলেন, 'উন্নয়নশীল দেশ হওয়ায় ২০২৬ সালের পর হয়তো স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে আমরা যে সুযোগ-সুবিধা পেতাম, তা হয়তো পাবো না। তবে আরও অনেক অপার সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে, অনেক বেশি বিনিয়োগের সুযোগ আসবে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে আমাদের শিল্প এবং সেবাখাতে অনেক বেশি দক্ষ জনবলের প্রয়োজন হবে। দেশের মধ্যে যদি এই দক্ষ জনবল তৈরি করা সম্ভব না হয়, তাহলে বিনিয়োগ ব্যহত হবে। বিনিয়োগ ব্যহত হলে দেশের জনগণের কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে।'

-শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে এসডিজির যেসব লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেগুলো অর্জন করে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশ হিসেবে পরিণত করার রূপকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য আমাদের ‘ডেমোগ্রাফিক ডেভিডেন্টের’ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। তার জন্য আমাদের হাতে খুব কম সময় রয়েছে। কেননা ২০৩১ সালের মধ্যে আমাদের জনমিতিক চেহারা বদলে যেতে শুরু করবে। কাজেই আগামী ১০ বছরের মতো একটা স্বল্প সময়ের মধ্যে আমাদের তরুণ যুবাদের কাজে লাগাতে হবে।

তিনি বলেন, 'সত্তর দশকের মাঝামাঝি ডেমোগ্রাফিক ডেভিডেন্ট শুরু হলেও এর পরবর্তী তিন দশক অপশাসনের কবলে পড়ে আমরা অনেক সুযোগ হারিয়ে ফেলেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার শাসনামলে যথাযথ উদ্যোগ নিয়ে এই সুযোগের অনেকখানিই আমরা কাজে লাগাতে পেরেছি। কিন্তু বাকি যে সময়টুকু রয়েছে, তা আমাদের দারুণভাবে কাজে লাগাতে হবে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগাতে চাই কর্মে প্রবেশের যোগ্যতা।'

-তিনি আরও বলেন, এদেশের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষায় অংশ নেয়। বিশ্বের আর কোনো দেশে এত সংখ্যক শিক্ষার্থী অনার্স-মাস্টার্স করে না। যেসব দেশ উন্নত হয়েছে, তাদের দিকে তাকালে আমরা দেখি, সেসব দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় অংশগহণ বেশি। এদেশে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল শতকরা এক ভাগেরও কম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০২০ সাল নাগাদ এটিকে ২০ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিলেন। বর্তমানে সেটি না হলেও আমরা এর কাছাকাছি গিয়েছি।

দীপু মনি বলেন, 'এবারের ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের এক বৈঠকে একটা গবেষণায় উঠে এসেছে যে, মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ‘কোলাবোরেটিভ প্রবলেম সলভিং ক্যাপাসিটি’ শেখাতে পারলে সারাবিশ্বে অর্থনীতিতে ২.৫৪ ট্রিলিয়ন ডলার যুক্ত হবে। আমাদের নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীরা সহযোগিতার মধ্য দিয়ে সক্রিয় অংশগ্রহণমূলক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শুধু পড়া মুখস্ত করে পরীক্ষা দিলাম, এরপর তা ভুলে গেলাম- এটি আর থাকছে না।'  

এদেশের তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজন মানসম্মত কারিগরি শিক্ষা: শিক্ষামন্ত্রী

'প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন এবং শিল্প দক্ষতা পরিষদের সমন্বয়ক শফিকুর রহমান ভূঁইয়া।  স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) দুলাল কৃষ্ণ সাহা। অনুষ্ঠানে নিজেদের সফলতার গল্প শোনান- যুব উদ্যোক্তা এবং ধ্রুবতারা ইউথ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী পরিচালক অমিয় প্রাপন চক্রবর্তী (অর্ক) এবং এনএসডিএ আয়োজিত দক্ষতা প্রতিযোগিতায় ফ্যাশন টেকনোলজি ট্রেড বলেন বিভাগে বিজয়ী লামিয়া নাফিসা রাইসা।'

-অনুষ্ঠানে এনএসডিএ-এর কার্যক্রম নিয়ে তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রথম প্রকাশিত স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এর আগে বিভিন্ন দক্ষতা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে ওসমানী মিলনায়তন পর্যন্ত একটি র্যা লি অনুষ্ঠিত হয়।

Share

আরো খবর


সর্বাধিক পঠিত